শুক্রবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০১:১৭ পূর্বাহ্ন
ভারত সরকার মুসলিম জনসংখ্যার অস্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশকে দায়ী করেছে। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দাবি করেছেন, সীমান্ত পেরিয়ে ব্যাপক অনুপ্রবেশের ফলেই আসাম, পশ্চিমবঙ্গসহ পূর্ব ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে মুসলিম জনসংখ্যা দ্রুত বেড়েছে।
শনিবার ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গতকাল এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, “অনুপ্রবেশ কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয়, এটি একটি জাতীয় সমস্যা এবং ভারতের গণতন্ত্রের জন্য বড় হুমকি।”
অমিত শাহের বক্তব্য অনুযায়ী, আসামে ২০১১ সালের আদমশুমারিতে মুসলিম জনসংখ্যার দশকব্যাপী বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৬ শতাংশ। তাঁর দাবি, “অনুপ্রবেশ ছাড়া এই বৃদ্ধি সম্ভব নয়। পশ্চিমবঙ্গের অনেক জেলায় মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধি ৪০ শতাংশ, আর সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে তা ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছেছে — যা অতীতের অনুপ্রবেশের স্পষ্ট প্রমাণ।”
তিনি আরও বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল অনুপ্রবেশকারীদের ‘ভোটব্যাঙ্ক’ হিসেবে ব্যবহার করছে এবং সেই কারণেই তারা এসব অনুপ্রবেশকারীদের রক্ষা করে। “কেন্দ্র একা অনুপ্রবেশ থামাতে পারে না; রাজ্য সরকারগুলোকেও দায়িত্ব নিতে হবে,” মন্তব্য করেন শাহ।
অমিত শাহ প্রশ্ন তোলেন, “গুজরাট ও রাজস্থানেরও সীমান্ত আছে, কিন্তু সেখানে অনুপ্রবেশ ঘটে না। তাহলে কেন আসাম ও পশ্চিমবঙ্গে এ প্রবণতা এত বেশি?”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের দিক থেকে অনুপ্রবেশের কারণে ঝাড়খণ্ডে উপজাতি সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।
শাহের মতে, যখন কেউ শরণার্থী ও অনুপ্রবেশকারীর পার্থক্য বুঝতে ব্যর্থ হয়, তখন সে নিজের আত্মার সঙ্গে প্রতারণা করে।
তবে বিরোধীদের অভিযোগ, বিজেপি সরকার নির্বাচনকে সামনে রেখে ইচ্ছাকৃতভাবে অনুপ্রবেশ ইস্যু উস্কে দিচ্ছে। কংগ্রেস ও তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা বলেছেন, কেন্দ্রের হাতে সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (BSF) থাকা সত্ত্বেও অনুপ্রবেশ বন্ধ না হওয়া সরকারের ব্যর্থতা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অমিত শাহের এ ধরনের বক্তব্য সংখ্যালঘুদের লক্ষ্য করে এক ধরনের রাজনৈতিক বার্তা বহন করে, যা নির্বাচনী কৌশলের অংশ হতে পারে। তারা বলছেন, “যখন দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও মূল্যবৃদ্ধির মতো বাস্তব সমস্যা সামনে, তখন সরকার জনসংখ্যা ও অনুপ্রবেশের ইস্যু তুলে ধরে জনমতকে বিভক্ত করতে চাইছে।”